যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নেতৃত্বে আসতে পারেন ড.সাজ্জাদ হায়দার লিটন

litonআগামীকাল ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। এই সপ্তম কংগ্রেসকে ঘিরে নানা রকম জল্পনা কল্পনা চলছে। যুবলীগের নেতৃত্বের পরিবর্তন কিভাবে হবে তা নিয়ে নানা রকম গুঞ্জন এবং আলাপ আলোচনা চলছে।

চলমান শুদ্ধি অভিযানে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। দুর্বৃত্তদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের জায়গা হয়ে ওঠা সংগঠনটির জাতীয় সম্মেলন আগামী শনিবার। কারা আসছেন নতুন নেতৃত্বে, তা পরিষ্কার নয় কারও কাছে। তবে সংগঠনের ভেতরে অনেকেরই নাম আলোচনায় আছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, সাংগঠনিক নেত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করবেন। তবে যুবলীগের বর্তমান কমিটি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে সমন্বয় করে দুজনকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে।

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে ড.সাজ্জাদ হায়দার লিটনের নাম বেশ জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে।

ড.সাজ্জাদ হায়দার লিটন সংগঠনটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। এর বাইরে এই পদের জন্য আরও এক ডজন নেতার নাম নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

যার মধ্যে রয়েছে বর্তমান কমিটির প্রেসিডিয়ামের কয়েকজন সদস্য, কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

আরও জানা গেছে, বর্তমান কমিটির অধিকাংশই নতুন কমিটিতে স্থান পাচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি, চাঁদা ও টেন্ডারবাজির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা, দলীয় কোন্দল সৃষ্টি, অনুপ্রবেশসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।

পাশাপাশি বর্তমান কমিটির যাদের বয়স ৫৫ বছর অতিক্রম করেছে, তাদেরও জায়গা হচ্ছে না নতুন কমিটিতে। অন্যদিকে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, দলের প্রতি নিবেদিত, ত্যাগী ও জনপ্রিয় নবীন-প্রবীণ সমন্বয়ে গঠন করা হচ্ছে সংগঠনটির নতুন কমিটি।

যুবলীগের ৭ম কংগ্রেস আগামীকাল শনিবার। এই কংগ্রেসের মাধ্যমেই সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নামও এদিন ঘোষণা করা হতে পারে।

এবারের কংগ্রেসে বর্তমান চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন, শেখ ফজলুর রহমান মারুফ ও শেখ আতিয়ার রহমান দীপুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। যুবলীগের দফতর সূত্রে জানা গেছে, গণভবন থেকে ‘সবুজ সংকেত’ না মেলায় তাদের দাওয়াতপত্র দেয়া হয়নি।

সম্মেলনের নেতৃত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নতুন সম্মেলন মানেই নতুন মুখ। অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্বের পরিবর্তন এসেছে। যুবলীগেও আসবে। তরুণ ও অভিজ্ঞদের সমন্বয় ঘটিয়ে কমিটি হবে।

ইতিমধ্যে নেতৃত্ব চূড়ান্তও হয়েছে, যা নির্ধারিত সময়ে দলীয় সভাপতি (শেখ হাসিনা) ঘোষণা করবেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে চূড়ান্ত তালিকায় থাকা ড.সাজ্জাদ হায়দার লিটন একজন সফল ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক । ড.সাজ্জাদ হায়দার লিটন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টা ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ।

ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, রাশিয়া-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির সেক্রেটারি, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য।

তরুণ যুব নেতা ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন রাজনৈতিকভাবে ঐহিত্যবাহী পরিবারের সন্তান আপাদমস্তক এই রাজনীতিবিদের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন মোহন একটানা ২৫ বছর ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন।এছারাও তিনি শাহজাদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং মিল্ক ভিটার ফাউন্ডিং মেম্বার ছিলেন।তিনি শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটনের পিতাকে এলাকার মানুষ যেভাবে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন, তেমনি ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন স্নেহ করে কাছে টেনে নেন।’

ড.সাজ্জাদ হায়দার লিটন যার সবকিছুতেই রাজনীতি। সত্যিকার অর্থে একজন অনুকরণীয় নেতা অকুতোভয় এই নেতা সত্য কথা বলতে এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে কখনোই দ্বিধা করেন না।

ড. লিটন জানান, আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে ছিল তখন বারবার রাজপথে নির্যাতিত হয়েছেন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনার কারামুক্তি আন্দোলনে রেখেছেন সক্রিয় ভূমিকা।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর তথা সারা বাংলাদেশের যুব সমাজের অহংকার, নিঃস্বার্থ, পরোপকারী এবং পরিচ্ছন্ন রাজনীতি চর্চার এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের দমন পীড়ন সহ্য করেছেন। কখনও মুজিব আদর্শ বিচ্যুত হননি।

তিনি দেশে বিদেশে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ব্যাপক কাজ করেন সে করনে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংঙ্গনে অত্যন্ত পরিচিত মুখ। ইতিমধ্যেই তার কূটনৈতিক কর্ম দক্ষতায় কারণে এবং বিনয়ী আচার আচরণে তৃনমূল নেতা কর্মী ও সাধারণ জনগণের পাশাপাশি দলের নীতি-নির্ধারকের কাছে তিনি সুনজরে আছেন বলে জানা গেছে।

এছারাও ড. লিটন জামায়াত-শিবির প্রতিরোধের আন্দোলনে মুখোমুখি সংঘর্ষে সরাসরি অংশগ্রহণ ও ১/১১-পরবর্তী নেত্রী (শেখ হাসিনা) মুক্তি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন যুবলীগের এ নেতা।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে আরও জানা গেছে, সাধারণ সম্পাদক পদে আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম শাহীন , প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন , আতাউর রহমান , সুব্রত পাল , সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এমরান হোসেন খান ।

তথ্যমতে, ক্যাসিনোসহ নানা অপকর্মে সংগঠনটির নেতাদের জড়িত থাকার অভিযোগে ব্যাপক পরিবর্তনের আভাস দিয়েছিল আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। ইতিমধ্যে তিন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগে সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্বের পরিবর্তন এসেছে।

যুবলীগে পরিবর্তনের বিষয়টি ও নেতৃত্বে কারা আসছেন তা নিয়ে সম্প্রতি গণভবনে দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। সেখানেই পরশ আর মহির নামটি আলোচনায় আসে।

শনিবার বেলা ১১টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেস উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কংগ্রেসকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে নেতাদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ৫৫ বছরের বেশি বয়সের কোনো নেতা এবারের কংগ্রেসে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন না।

ফলে সংগঠনটির শীর্ষ পদপ্রত্যাশী প্রভাবশালী অনেক নেতার মাথায় হাত পড়েছে। বয়সের কারণে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ নতুন কমিটিতে থাকতে পারছেন না। ২০১২ সালের ১৪ জুলাই যুবলীগের ষষ্ঠ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়।

জানতে চাইলে যুবলীগের কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম বলেন, এবার সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে। বিতর্কিতরা বাদ পড়বেন। কংগ্রেস প্রস্তুতি সম্পন্ন। নিজে প্রার্থী কি না জানতে চাইলে বলেন, প্রত্যাশা তো সবারই থাকে। তবে নেত্রী (শেখ হাসিনা) যাকে দায়িত্ব দেবেন তার নেতৃত্বেই যুবলীগ সামনে এগিয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, বুধবার গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। সেখানে কংগ্রেসের প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা অবহিত করেছি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হাইকমান্ডের নির্দেশে যুবলীগের বয়সসীমা ৫৫ বছর নির্ধারণ করে গঠনতন্ত্র সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করা আছে। সেটি কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে।

জানা যায়, ক্যাসিনোকাণ্ডে চলমান অভিযানে যুবলীগের অনেক নেতা গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। দেশের ভেতরে ও বাইরে পলাতকের সংখ্যাও কম নয়। শীর্ষ কয়েক নেতা এখনও আতঙ্কে।

ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত অন্য নেতাদের সঙ্গে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর নাম আলোচনায় আসে।

বিষয়টিতে বিব্রতবোধ করে আওয়ামী লীগ। নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় তাকে। গণভবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আসে তার ওপর। তলব করা হয় ব্যাংক হিসাব। বিদেশ সফরেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

ইতিমধ্যে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী নেতাদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছেন। অপরাধী যেই হোক কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার পর চলমান অভিযানে অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার ও রিমান্ড আতঙ্কে আছেন। ফলে আসন্ন সম্মেলনে প্রার্থী হওয়া না-হওয়া নিয়েও দোলাচলে আছেন অনেকে।

জানা যায়, যুবলীগের ৩৫১ সদস্যের বর্তমান কমিটিতে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া সবার বয়স ৬০ বছর পেরিয়ে গেছে। কারও কারও বয়স ৭০-এর কোঠা ছাড়িয়েছে।