নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা জাঁদরেল কর্মকর্তাদের বৈঠক। উর্দ্ধতন সব কর্মকর্তারাই দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি আলোচনা করলেন। বিশেষ করে, ১৫ আগস্ট পান্থপথে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা নিয়ে আলোচনা চলল দীর্ঘক্ষণ। দেশে বেশ কিছু আত্মঘাতী অবস্থান নিয়েছে। এদের লক্ষ্য প্রকাশ্য জনসভায় বা জনবহুল স্থানে ‘আত্মঘাতী বোমা হামলা চালান। নিরাপত্তা বিশ্লেষণে আরও পর্যালোচনা হলো, জঙ্গিদের প্রধান টার্গেট হলো শেখ হাসিনা। তাঁকে সরিয়ে ফেলতে পারলেই যুদ্ধপরাধীদের সাধ পূরণ হয়, বিএনপি এবং তারেকের স্বপ্নও পূরণ। এরকম স্পর্শকাতর সময়ে প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতরা পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী যেন ঢাকার বাইরে কোনো কর্মসূচি না করেন। ঢাকাতেও প্রকাশ্যে, উন্মুক্ত স্থানে কোনো কর্মসূচি না করার পরামর্শ দিলেন তারা।
এই পরামর্শ নিয়ে উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে বোঝাতে গেলেন। ২০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পূব-নির্ধারিত কর্মসূচি বন্যার্ত মানুষের পাশে যাওয়া। দেশের উত্তরাঞ্চলে সফর করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী সব মন দিয়ে শুনলেন। তারপর বললেন,‘তোমাদের দায়িত্ব নিরাপত্তা দেওয়া, আর আমার দায়িত্ব মানুষের সেবা করা। ভোগ বিলাসের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী হইনি। আমি প্রধানমন্ত্রী হয়েছি, মানুষের সেবা করার জন্য। যদি দূর্গত মানুষের পাশে না দাঁড়াতে পারলাম।, তাঁদের কষ্ট একটু লাঘব না করতে পারলাম, তাহলে প্রধানমন্ত্রী থেকেই লাভ কী, আর বেঁচে থেকেই লাভ কী? আমি যাবই, তোমরা যদি পারো নিরাপত্তা দাও, না দিতে পারলেও আমি যাব। ব্যস, সবাই বুঝে গেলেন বার্তা। কাজ শুরু করলেন। কাল প্রধানমন্ত্রী বন্যা উপদ্রুত এলাকা পরির্শনে যাচ্ছেন।
এরকম ঘটনা একটা না, অনেক। ২০০৯ সালের কথাই ধরা যাক, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে কেবল। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহের মতো মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। সেনাবাহিনীতে উথাল-পাতাল। এর মধ্যে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব প্রাপ্তরা বারন করল, প্লিজ আপনি যাবেন না। সহকর্মীদের হারিয়ে অধিকাংশ সেনা কর্মকর্তা উত্তেজিত। শেখ হাসিনা অনঢ় তিনি গেলেন তাঁর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক সিদ্দিকী আর মতিয়া চৌধুরী। সেদিন তাঁর সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়নি, এমন কি কাউকে পাওয়া যাবে এই বাংলাদেশে?
এরকম অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যায়, যেখানে শেখ হাসিনা মানুষের জন্য মৃত্যুর ঝুঁকিকেও উপেক্ষা করেছেন। তিনি সব সময় মানুষের কাছে থাকতে চান, মানুষকে নিয়ে ভাবতে চান, মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করতে চান। এই কল্যাণব্রতে কোনো বাধাই তিনি মানতে রাজি নন। এটাই তাঁর চরিত্রের অনন্যতা। এই সাহসের শক্তি কী? এ প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে প্রায়ই। ঘনিষ্ঠরা, দূরের মানুষ সবাই জিজ্ঞেস করে, এত সাহস তিনি পান কোথায়? সব সময় এ প্রশ্ন শুনলেই দৃঢ় হয়ে যান, একটু হাসেন। তারপর বলেন, ‘৮১ তে যখন দেশে আসলাম জিয়ার সব বাধা বিঘ্ন উপেক্ষা করে, তখন এদেশের মানুষের ঢলই তো আমাকে রক্ষা করেছিল। না হলে তো দেশে ফিরতে পারতাম না। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তো এদেশের মানুষই আমাকে বাঁচিয়েছিল। জনগণই আমার শক্তি, জনগণই আমার সাহস। জনগণের প্রতি ভালোবাসা যতদিন থাকবে ততদিন আমি কোনো কিছুতেই ভয় পাই না। সততার শক্তির চেয়ে বড় কিছু নেই। জনগণের শক্তিতেই শেখ হাসিনা অনন্য।-বাংলা ইনসাইডার
পাঠকের মতামত