শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় তার ‘ফেরা’ উপন্যাসে বলেছেন, যারা খুন করে তারা জানে না একজন মানুষ মানে একটা জগৎ। কত সম্পর্কে জড়িয়ে থাকে একটা মানুষ-বৌ-বাচ্চা-মা-বাবা-ভাই-বোন-বন্ধু… ওরা তা ভুলে যায়।
ওরা মারে বিচ্ছিন্ন একটা মানুষকে। সেই মার সেই লোকটাকে ছাড়িয়েও ছড়িয়ে ছড়িয়ে যায়। একজন মানুষের সঙ্গে আরো কত মানুষ শেষ হয়। যারা খুন করে তারা কি তা জানে?
১৫ আগস্ট নিয়ে লিখতে বসে সেই কথাই মনে করছিলাম। যারা বেঁচে গেছেন তাদের কথা কতজন লিখেছেন। ১৬ আগস্ট শুক্রবার ব্রিটেনের টেলিগ্রাফ পত্রিকায় শেখ তাপসের কান্না সম্বলিত একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মাত্র চার বছর বয়সে তার বাবা-মা মারা যান। বাবা ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি। মুজিব বাহিনীর কর্ণধারদের একজন। নিউক্লিয়াসদের একজন। দেশ স্বাধীন হবার পরে অনেকেই তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিকল্প উত্তরাধিকার মনে করছিলেন। মা আরজু মনি ছিলেন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
যে রাতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় সে রাতেই শেখ মনিকে হত্যা করা হয়। তাপস খাটের নিচে লুকিয়ে ছিলেন। মাত্র চার বয়স তাঁর। কিছুদিন পরেই ছিল তাঁর জন্মদিন। সেই দিন থেকে তাপস আর জন্মদিন পালন করেননি।
ইতিহাসের কী নির্মম পরিহাস সেই চার বছরের বাচ্চাই বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার উকিল। প্রলম্বিত সেই বিচারেই দীর্ঘ ১৩ বছর পরে যেদিন আপিল কোর্টের রায় ঘোষিত হলো সেদিন ছিল তাঁর ৩৮তম জন্মদিন। সেদিন ছিল তাঁর জন্মদিন। কাকতলীয় বটে এ কোন জন্মদিন তোমার!
যে কথা বলছিলাম তাপস এভাবেই নেতা হয়ে ওঠেন। তাঁর বাবার মতো। বন্ধু-বান্ধব ক্লাসমেট ডিপার্টমেন্টের ছোটদের সাহায্যে তাঁর জুড়ি নেই। আত্মাটা খুবই বড়। এই লন্ডনেও তিনি খুব সরল জীবন যাপন কাটিয়েছেন।
তিনি এসব ভোলেননি। অকপটে বলেন। বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর স্বপ্ন শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়ার। তাঁর সাথে আলাপ করলেই বুঝতে পারবেন। তাঁর সু স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
ফেসবুক থেকে
পাঠকের মতামত