প্রকাশিত: জানুয়ারী ২, ২০১৮ ১১:১৯ এএম
accedent

accedentবিদায়ী বছরে সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা ২০১৬ সালের তুলনায় বেড়েছে। তবে তা ২০১৫ সালের তুলনায় কম। গত বছর সারা দেশে তিন হাজার ৪৭২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ হাজার ২৮৪ জন নিহত ও ৯ হাজার ১১২ জন আহত হয়েছেন। নিহতের তালিকায় নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৫১৬ ও ৫৩৯। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে এসব দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

সোমবার নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) বার্ষিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন ২০১৭-তে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ২২টি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে এই বেসরকারি সংগঠনটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

আরও পড়ুন: বছরজুড়ে আলোচনা-সমালোচনায় ওরা ১১ জন
জাতীয় কমিটির তথ্য মতে, ২০১৬ সালে দুই হাজার ৯৯৮টি দুর্ঘটনায় ৪৭০ নারী ও ৪৫৩ শিশুসহ তিন হাজার ৪১২ জন নিহত এবং ৮ হাজার ৫৭২ জন আহত হয়েছেন। তবে ২০১৫ সালে ৪ হাজার ৫৯২টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৬ হাজার ৮২৩ ও ১৪ হাজার ২৬ জন। নিহতের মধ্যে ৭৮১ নারী ও ৭৬২ শিশু ছিল। এই হিসেবে, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির হার যথাক্রমে ১৫ দশমিক ৮২ ও ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সর্বাধিক ৩৭২টি দুর্ঘটনায় ৫৬ নারী ও ৫৮ শিশুসহ মোট ৪৭২ জন নিহত এবং ১ হাজার ৯৪ জন আহত হয়েছেন। একই বছর আগস্টে সর্বনিম্ন ২১৭টি দুর্ঘটনায় ২৫ নারী ও ৩১ শিশুসহ ২৭৯ জনের প্রাণহানি ঘটে। আর আহত হন ৫০৩ জন।

বছর ব্যাপী পর্যবেক্ষণে দুর্ঘটনা বৃদ্ধির জন্য ৯টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছে জাতীয় কমিটি। সেগুলো হচ্ছে- ১. বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, ২. সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি, ৩. স্থানীয়ভাবে তৈরি দেশীয় ইঞ্জিনচালিত ক্ষুদ্রযানে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, ৪. বিধি লঙ্ঘন করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং, ৫. জনবহুল এলাকাসহ দূরপাল্লার সড়কে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, ৬. দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো, ৭, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও বেহাল সড়ক, ৮. ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব এবং ৯. অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ।

জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপক্ষগুলোর যথাযথ তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ এবং সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবই দায়ী। দুর্ঘটনা সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে আনতে হলে গণপরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা দূর করতে হবে। সে ক্ষেত্রে শ্রমিক-কর্মচারিদের নিয়োগপত্র ও উপযুক্ত বেতন-ভাতা প্রদান এবং চাঁদাবাজি ও দখলদারীত্ব বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে জরুরি বলে মনে করেন করেন আশীষ কুমার দে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ৩৫০টি দুর্ঘটনায় ৫৪ নারী ও ৫৫ শিশুসহ ৪১৬ জন নিহত ও ১,০১২ জন আহত হয়েছেন। মার্চে ৩৩০টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৬২ জন; যার মধ্যে ৪৯ নারী ও ৫৪ শিশু রয়েছে। আর আহত হয়েছেন ৮৬৫ জন। এপ্রিলে ৩২০টি দুর্ঘটনায় ৪৭ নারী ও ৪৮ শিশুসহ ৩৪৯ জন নিহত এবং ৮৬১ জন আহত হয়েছেন।

মে মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৪৬টি; এতে ৫২ নারী ও ৫৮ শিশুসহ ৪১০ জন নিহত ও ১,০১৬ জন আহত হন। জুনে ২৬৫টি দুর্ঘটনায় ৩৪ নারী ও ৪২ শিশুসহ ৩৩৩ জন নিহত ও ৬৩২ জন আহত হয়েছেন। জুলাইয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২১৯টি; এতে নিহত ও আহত হয়েছেন যথাক্রমে ২৭৯ ও ৫১৭ জন। নিহতদের মধ্যে ২৭ নারী ও ৩৫ শিশু রয়েছে। সেপ্টেম্বরে ২৪৯টি দুর্ঘটনায় ৩৮ নারী ও ৩৯ শিশুসহ ৩৫৬ জন নিহত এবং ৬০৫ জন আহত হয়েছেন। অক্টোবরে ২৫৮টি দুর্ঘটনায় ৩৭৯ জন নিহত ও ৬৮১ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে ৪১ নারী ও ৪৫ শিশু রয়েছে। নভেম্বরে ২৩৭টি দুর্ঘটনায় ৩৯ নারী ও ৪২ শিশুসহ ৩৪১ জন নিহত ও ৬০৯ জন আহত হয়েছেন। ডিসেম্বরে ৩১০টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৩৫ ও ৭১৭। নিহতদের মধ্যে ৫৪ নারী ও ৩২ শিশু রয়েছে।

পাঠকের মতামত

irfan_khan

মা’রা গেছেন ইরফান খান

না ফেরার দেশেই চলে গেলেন ইরফান খান। ৫৪ বছর বসেই চলে গেলেন বলিউড অভিনেতা ইরফান ...
siria

১৩ বছর ধরেই তারা লকডাউনে

‘লকডাউন’ শব্দটির সঙ্গে বিশ্ব নতুন পরিচিত হলেও এ বাস্তবতার সঙ্গে অনেক আগেই মানিয়ে নিয়েছে ফিলিস্তিনের ...
govt

বাড়ছে না আর সরকারি ছুটি!

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এর সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রায় এক মাসেরও ...