ভ্রমণ কিংবা চিকিৎসাসহ নানান কাজে নিয়মিতভাবে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে যান অনেকে। তাদের বেশিরভাগই ভারতের ভিসা প্রাপ্তির জটিল বিষয়ে আটকে যাওয়ার চিন্তায় পড়ে যান। যদিও এটা তেমন কঠিন কিছু নয়।
আগে ভারতের ভিসা আবেদনের পর জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়ের সিরিয়ালের প্রয়োজন হতো। এটি পেতে বেশ হিমশিম খেতেন অনেকেই। তবে এসব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এখন বিষয়টি খুবই সহজ!
সম্প্রতি বাংলাদেশি নাগরিকদের সুবিধার্থে জন্য ভিসা প্রাপ্তি সহজ করতে ঢাকার জন্য মাত্র একটি ভিসাকেন্দ্র নির্ধারণ করেছে ভারতীয় দূতাবাস। ফলে এখন ঢাকায় একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকেই ভিসা সংক্রান্ত সব কাজ করা যায়। ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কে ১৮ হাজার ৫০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে এখন ভারতীয় ভিসাকেন্দ্র। প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার গ্রাহক এখান থেকে সেবা নিতে পারছেন।
বলা হচ্ছে, এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভারতীয় ভিসাকেন্দ্র। এখানে আছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত টোকেন ভেন্ডিং মেশিন (প্রত্যাশিত প্রতীক্ষা সময় নির্দেশিত হবে), আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অপেক্ষা করার স্থান, কফি ও কোমল পানীয় ভেন্ডিং মেশিন, খাবার দোকান ও আবেদন জমা দেওয়ার জন্য ৪৮টি কাউন্টার। জ্যেষ্ঠ নাগরিক, নারী, মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যবসায় ভিসা আবেদনের জন্য রয়েছে আলাদা কাউন্টার। এছাড়া রয়েছে বিশেষ সহায়তা ডেস্ক ও প্রিন্টিং, ফটোকপি ইত্যাদি সুবিধা। মূল্য পরিশোধ করে এসব সেবা মিলবে।
ভিসা প্রাপ্তির জন্য প্রথম অনলাইনে এই ঠিকানায় গিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। এর আগে সদ্য তোলা সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের ২ ইঞ্চি বাই ২ ইঞ্চি ছবি সংগ্রহ করে সেটি স্ক্যান করে নিন। কারণ অনলাইনে পূরণকৃত ফরমের সঙ্গে স্ক্যানকৃত ছবি যুক্ত করতে হবে। ছবির সাইজ হবে ১০-৩০০ কিলোবাইট। ফরম পূরণ করা হয়ে গেলে তা প্রিন্ট করে সদ্য তোলা ছবি যুক্ত করে নিন।
এবার ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের প্রবেশমুখে গিয়ে ভিসা ফি জমা দিন। প্রবেশমুখের সামনেই ভিসা ফি জমা দেওয়ার বুথ রয়েছে। সেখানে সংশ্লিষ্টরা আবেদনপত্র চেক করে ভিসা ফি নিয়ে ‘পেইড’ সিল দিয়ে দেবে। ভিসা ফি জমা হওয়ার পরেই আবেদনপত্রে উল্লেখ করা মোবাইল ফোনে নিশ্চয়তার মেসেজ চলে আসবে। এবার আবেদনপত্রটি নিয়ে যমুনা ফিউচার পার্কে প্রবেশ করে চলে যান ভিসা জমাদান কেন্দ্রে। সেখানে একটি সিরিয়াল নম্বরযুক্ত টোকেন দেওয়া হবে। টোকেনে থাকা নম্বরটি ভিসাকেন্দ্রে থাকা বোর্ডের সঙ্গে মিলিয়ে নিন। এতে করে জানা যাবে ভিসার আবেদনপত্র জমা দিতে কোন বুথে যেতে হবে।
নির্দিষ্ট বুথে গিয়ে ফরম জমা দিন। আবেদনপত্রে উল্লেখ করা মোবাইল ফোনে জমা হওয়ার মেসেজ আসবে। ভিসা আবেদনপত্র জমা শেষেও আরেকটি টোকেন দেওয়া হবে। এটি পাসপোর্ট সংগ্রহের বেলায় লাগবে। তাই সেটি সংরক্ষণ করা জরুরি। দূতাবাস থেকে পাসপোর্ট যখন ভিসাকেন্দ্রে আসবে তখনও একটি মেসেজ পাঠানো হবে মোবাইল ফোনে। নির্দিষ্ট দিনে টোকেন দেখিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিতে হয়।
পাসপোর্ট জমা দেওয়ার পর চাইলে পাসপোর্টের অবস্থান জানা যাবে। এজন্য এই ঠিকানায় গিয়ে টোকেনে থাকা অ্যাপ্লিকেশন আইডি, পাসপোর্ট নম্বর ও স্ক্রিনে দেখানো অ্যাকসেস কোড লিখে জমা দিলেই ভিসা স্ট্যাটাস বা আবেদনপত্রের স্ট্যাটাস সামনে আসবে।
ভাবছেন এত বড় প্রক্রিো শেষ করতে কতক্ষণ লাগবে? ফরম নিয়ে ভিসাকেন্দ্রে জমা দেওয়াসহ পুরো কাজটি করতে লাগবে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট!
আর পাসপোর্ট সংগ্রহ করতেও এর চেয়ে বেশি সময় লাগবে না। ভিসাকেন্দ্র রবি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চালু থাকে। আর প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পাসপোর্ট সংগ্রহের সময়।তো আর চিন্তা কি! দ্রুততার সঙ্গে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চলে যান যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসাকেন্দ্রে। যমুনা ফিউচার পার্কের প্রবেশমুখেও নিয়মাবলীর বিস্তারিত রয়েছে। চাইলে পড়ে নিতে পারেন।
পাঠকের মতামত