দেশের উন্নয়ন যেন কোনোভাবে দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থা প্রধানদের আরও ভালোভাবে নজর রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, একেবারে নিম্নস্তর পর্যন্ত যারা কাজ করে তাদেরকে এ ব্যাপারে সচেতন করতে আপনাদেরই (বিভাগ ও সংস্থা প্রধান) নির্দেশনা দিতে হবে।
শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর ২০১৯ ও ২০২০ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সারাদিন খেটেখুটে এতো কাজ করি, এখন যদি দুর্নীতির কারণে সব নষ্ট হয়ে যায়, এটা সত্যি খুব দুঃখজনক। দুর্নীতির ক্ষেত্রে আমি বলবো, কেউ ঘুষ নিলেই শুধু সে অপরাধী হবে তা না, যে দেবে সেও অপরাধী। কাজেই যে দেবে সেও অপরাধী, যে নেবে সেও অপরাধী।
জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ সারা বিশ্বব্যাপী একটা সমস্যা। তারপরও বাংলাদেশে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি এবং সেটাও আমাদের ধরে রাখতে হবে। সাথে সাথে আমাদের উন্নয়নটা যেন কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় দুর্নীতির কারণে সে বিষয়টাও সকলকে আরও ভালভাবে দেখতে হবে। মানুষের প্রতি আরও দায়িত্বশীল হতে হবে এবং অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে, সেদিকে লক্ষ রেখেই কাজ করতে হবে।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা সচিবদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ ও দেশের মানুষের ভালো থাকার স্বার্থে সবাই মনোযোগ দিয়ে আরও বেশি করে কাজ করবেন। শুধু ১০টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ কেন? আগামীতে প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে পুরস্কার দিতে চাই। পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করবেন, আশা করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রসাশনের কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার ফলেই দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষ অপনাদেরর কাজের সুফল পাচ্ছে। কর্মকর্তাদের কাজের ফলেই আমাদের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে, মাথা পিছু আয় বেড়েছে।
তিনি বলেন, দেশ এগিয়ে যাওয়া এবং মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে যাওয়ার ফলেই আজ আমরা ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিতে পেরেছি। ৫ লাখ কোটি টাকার বাজেট কবে দিতে পারব, এটা নিয়ে আমি এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেবের সঙ্গে অনেক দিন আলাপ করেছি। শেষ পর্যন্ত সেই বাজেট আমরা দিলাম কিন্তু মুহিত সাহেব দিতে পারলেন না, যা হোক ওনার বয়স হয়ে গেছে। এ কারণে সম্ভব হয়নি।
শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ প্লান ছাড়া দেশকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব না। এ কারণে আমরা সবসময় দীর্ঘ মেয়াদি প্লান নিয়ে কাজ করছি। আগামী ২১ এবং ৪১ সালকে সামনে রেখে আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এ পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায় হলে ৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত একটি দেশ।
তিনি বলেন, গ্রামের ও শহরের মধ্যে সুযোগ সুবিধার ষৈম্য কমাতে চাই। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে আধুনিক সুযোগ সুবিধা দিতে চাই। এ জন্য আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে আমার গ্রাম আমার শহর কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। এ ছাড়া জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস বক্তব্য দেন।
পাঠকের মতামত