ঢাকা, Sunday, 5 May, 2024

Smart_IDফ্রান্সের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হলেও এখন ৭ কোটি ভোটারের হাতে যায়নি স্মার্ট কার্ড। গত দুই বছর আগে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে প্রকল্পের চুক্তি বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এখন পর্যন্ত দেশের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটারকে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে পারেনি। ফলে অনিশ্চয়তায় রয়েছে কয়েক কোটি নাগরিক।

সম্প্রতি ইসিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ কমিটির সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, আইডিইএ প্রকল্পের মাধ্যমে স্মার্টকার্ড মুদ্রণ ও বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ কোটি।

স্মার্টকার্ড মুদ্রণ শুরু হয় অক্টোবর ২০১৫ থেকে এবং বিতরণ শুরু হয় হয় ৩ অক্টোবর ২০১৬ সালে। এখন পর্যন্ত স্মার্টকার্ড মুদ্রণ করা হয়েছে ৪ কোটি ৬০ লাখ। আর বিতরণ করা হয়েছে ৩ কোটি ৩২ লাখ ১০ হাজার স্মার্টকার্ড।

কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়, উপজেলার নির্বাচন অফিসে প্রচুর পরিমানে অবিতরণকৃত কার্ড রয়েছে এবং নট ফাউন্ড সমস্যার কারণে স্মার্ট কার্ড মুদ্রণ করা সম্ভব হচ্ছেনা।

এসব এলাকায় ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে অবিতরণকৃত স্মার্টকার্ডগুলো বিতরণের ব্যবস্থা করবে ইসি। এজন্য বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ৯ কোটি ভোটারের জাতীয় পরিচয়পত্র স্মার্টকার্ড তৈরি ও হস্তান্তরের জন্য ২০১১ সালের জুলাইয়ে আইডিইএ নামক একটি প্রকল্প হাতে নেয় ইসি। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংক থেকে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে স্মার্টকার্ড উৎপাদন-বিতরণে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে চুক্তি করে ইসি। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের জুনে। পরে মেয়াদ ১৮ মাস বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

তারপরও চুক্তি অনুযায়ী কার্ড না দিতে পারায় ফরাসি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ইসি। পরে এ প্রকল্পে অর্থায়নে অনাগ্রহ দেখায় বিশ্বব্যাংক। বর্তমানে স্মার্টকার্ড মুদ্রণ দেশীয় প্রযুক্তিতে চলছে বলে জানিয়েছে ইসি।

সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে ১০ কোটি ৪৭ লাখের বেশি ভোটার রয়েছেন। ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে ইসির চুক্তি হয়েছিল ৯ কোটি ভোটারের জন্য। ফলে চুক্তির সময় জানা যায়, প্রথমে ১ কোটির ওপরে ভোটার স্মার্টকার্ড পাবেন না।

পরে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান চুক্তি অনুযায়ী সব কার্ড না দেওয়ায় তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ইসি। ফলে সে সময় নতুন করে আরও কয়েক কোটি নাগরিকের ভাগ্য অনিশ্চয়তায় পরে।

ইসির সভার কার্যবিবরণীতে জানা যায়, এখন পর্যন্ত ১০ কোটি ৪৭ লাখ ভোটারের মধ্যে ৪ কোটি ৬০ লাখ ভোটারের সবাইকে স্মার্টকার্ড যদি দিয়ে দেওয়া হয়, বাকি ভোটারদের বিষয়ে কি করা হবে, তারা কি স্মার্টকার্ড পাবেন? পেলেও কত বছর পর পেতে পারেন।

এসব বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগে ইসি থেকে একাধিকবার বলা হয়েছিল ২০১৯ সালের মধ্যে সবার হাতে স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মোট ভোটারের এক-তৃতীয়াংশ নাগরিকের হাতে স্মাট কার্ড দিতে পারেনি ইসি।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম দেশের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরে ইসির যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দেশের বাইরে যাওয়ার আগে বলেন, র্স্মাটকার্ডের সম্পর্কে এনআইডি উইং বলতে পারবেন বিস্তারিত।

আমি তেমন কিছু বলতে পারবনা। তবে এটুকু বলতে পারি সব নাগরিকের হাতে র্স্মাট র্কাড তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। তবে কবে নাগাত সবাই র্স্মাট কার্ড পাবে বা নতুন কোন প্রকল্প হাতে নিবে কিনা এটি কমিশন বলতে পারবে।